ড. ইউনূস থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন ৩ এপ্রিল


ষষ্ঠ বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ৩ এপ্রিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে যাবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী ২ থেকে ৪ এপ্রিল ব্যাংককে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

স্থানীয় কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরীয় সহযোগিতা সংস্থা বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ৩-৪ এপ্রিল থ্যাইল্যান্ড সফর করবেন প্রধান উপদেষ্টা। সফরের প্রস্তুতি চলছে। আর এটাই হবে প্রথম বিদেশ সফর যেখানে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। আগামী ১ এপ্রিল জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্রসচিব। পরদিন ২ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। আর ৪ এপ্রিল বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন সরকারপ্রধান।

বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে বৈঠকের জন্য গত সপ্তাহে ভারতকে কূটনৈতিক পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্টদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত চিঠির জবাব পায়নি ঢাকা। তবে ব্যাংককে মোদির সঙ্গে ইউনূসের বৈঠক নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

স্থানীয় এক কূটনীতিক এ বিষয়ে বলেন, ‘আমাদের চাওয়া বৈঠকটা হোক। আমরা আশা করছি, এটা হবে। এখনও দিল্লি থেকে ‘না’ বলে নাই। যদি তারা না দিয়ে থাকে লিখিত জানাবে হয়ত। কিন্তু এখন অবধি আমরা লিখিত জবাব পাইনি। তার মানে হতেও পারে বৈঠকটি। সামিটের আগের দিনও অনেক কিছু হয়। আমরা আশাবাদী।

সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নয়াদিল্লিতে সংসদীয় প্যানেলের একটি বৈঠকে বলেন, ‘ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির বৈঠক আয়োজনে বাংলাদেশের অনুরোধ বিবেচনা করা হচ্ছে।’

ভারতের বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্যে ব্যাংককে ইউনূস-মোদির বৈঠকের সম্ভবনা দেখছে ঢাকার কূটনৈতিক অঙ্গন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে যে টানাপড়েন চলছে সেটি প্রশমিত করতে এ বৈঠক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়তা করবে। আর এটি দুই দেশের জন্যই ভালো হবে। কোনো কারণে ব্যাংককে ইউনূস-মোদির বৈঠক না হলেও তাদের সাক্ষাৎ হবে, সেটি নিশ্চিত।

ব্যাংকক সফরকালে সরকারপ্রধান থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনার পতনের তিন দিনের মাথায় গত বছরের ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেন। এরপর নভেম্বরে আজারবাইজানে কপ-২৯ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। গত ডিসেম্বরে ড. ইউনূস ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে মিশর সফর করেন।

সবশেষ, চলতি বছরের জানুয়ারিতে দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (উব্লিউইএফ) বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। আগামীকাল (২৬ মার্চ) প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে চীনে সরকারি সফর করবেন ড. ইউনূস। চীনের সফরটি একসঙ্গে দ্বিপক্ষীয় এবং বহুপক্ষীয়। চীন সফরের পরপরই বহুপক্ষীয় সফরে থ্যাইল্যান্ড যাবেন সরকারপ্রধান।

আরও খবর